দীর্ঘদিন পর ক্লাসে শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২২ | আপডেট: ১১:৫০:পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২২

করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন আতঙ্কে এক মাস ধরে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দীর্ঘদিন পর স্কুল-কলেজ খুলে যাওয়ায় সকাল থেকেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক সবার মাঝেই ছিলো খুশির ঢেউ।

তবে স্কুলগুলোর যেসব শিক্ষার্থী করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধী টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে, তারাই কেবল শ্রেণিকক্ষে ফিরতে পেরেছে। বাকিদের ক্লাস হবে অনলাইনে।

রাজধানীর একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, আবারও সশরীরে ক্লাস চালু হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলের সামনে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের ভিড়। সময়ের আগে অনেকেই এসেছেন স্কুলের ফটকের সামনে। সেখানে অভিভাবকরা এবং শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে কুশল বিনিময় করছেন।

শিক্ষার্থীদের স্কুলে প্রবেশ পথেই তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র দিয়ে তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। এর পর শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ শ্রেনী কক্ষের নির্ধারিত আসনে গিয়ে বসছে। এ সময় সবার মুখে ছিল মাস্ক।

এর আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে শ্রেণিকক্ষে অংশ নিতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কীভাবে চলবে এ বিষয়ে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গাইডলাইন এর নির্দেশনা ছাড়াও ২০টি নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।

যেসব নির্দেশনা মেনে চলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান:

১. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে সকল শিক্ষার্থী কোডিড-১৯ টিকার ২য় ডোজ গ্রহণ করেছে সে সকল শিক্ষার্থী সশরীরে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

২. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রবেশমুখসহ অন্যান্য স্থানে কোডিড-১৯ অতিমারি সম্পর্কিত সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে করণীয় বিষয়সমূহ ব্যানার বা অন্য কোন উপায়ে প্রদর্শন।

৩. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পথে সকল শিক্ষক-কর্মচারী-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে নিয়মিত তাপমাত্রা মাপা ও তা পর্যবেক্ষণ।

৪. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইন/ভার্চুয়াল প্ল্যাটফরম-এ শিখন-শেখানো কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

৫. শিক্ষার্থীদের জন্য বিতরণকৃত অ্যাসাইনমেন্টসমূহের কার্যক্রম যথারীতি অব্যাহত থাকবে।

৬. শিক্ষার্থীদের ক্লাস রুটিন ইতোপূর্বে প্রেরিত নির্দেশনা মোতাবেক প্রণয়ন করতে হবে।

৭. শিক্ষার্থীদের ভিড় এড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানের সবগুলো প্রবেশ/প্রস্থান মুখ ব্যবহার করার ব্যবস্থা করা। যদি কেবল একটি প্রবেশ/প্রস্থান মুখ থাকে সেক্ষেত্রে একাধিক প্রবেশ/প্রস্থান মুখের ব্যবস্থা করা।

৮. প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণি কার্যক্রমে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা করা।

৯. প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা কিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করবে এবং বাসা থেকে যাওয়া আসা করবে সেই বিষয়ে তাদেরকে শিক্ষানীয় ও উদ্বুদ্ধকারী ব্রিফিং দিতে হবে।

১০. প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে প্রস্তুত রাখা।

১১. প্রতিষ্ঠানের সকল ভবনের কক্ষ, বারান্দা, সিঁড়ি, ছাদ এবং আঙ্গিনা যথাযথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা করা।

১২. প্রতিষ্ঠানের সকল ওয়াশরুম নিয়মিত সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা এবং পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা রাখা।

১৩. প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, অভিভাবকসহ অন্য কেউ প্রবেশ/অবস্থান/প্রস্থানের সময় সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন করা।

১৪. প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারী এবং অন্য কেউ সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করার বিষয়টি নিশ্চিত করা।

১৫. প্রতিষ্ঠানে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দ্বারা হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা।

১৬. শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করা। এক্ষেত্রে পারস্পরিক ৩ (তিন) ফুট শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করা।

১৭. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ, ড্রেন ও বাগান যথাযথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা এবং কোথাও পানি জমে না থাকে তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা।

১৮. প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা নিরূপণ করা।

১৯. প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনন্দঘন শিখন কার্যক্রমের মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত করা।

২০. প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের সাথে সভা করে এতদসংক্রান্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।