ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন কপিনে বন্দি! ১৯ লাখ টাকা দিয়েও ছেলেকে বাঁচানো গেল না. ফিরলো লাশ

প্রকাশিত: ১২:১৮ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১, ২০২২ | আপডেট: ১২:১৮:পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১, ২০২২
জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:

জমি-জমা সব বিক্রি করেও ছেলের জীবন রক্ষা করা করতে পারলেন এক কৃষক বাবা। দালালের মাধ্যমে ^ গেম” নামক মরণযুদ্ধে স্বপ্নের দেশ ইতালি যাওয়ার পথে মৃত্যু ওই কৃষকের তরণ ছেলে একুয়ান ইসলামের (১৯)।

 

গতকাল শুক্রবার তাঁর গ্রামের বাড়ী সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের শ্রীধরপাশা গ্রামে মরদেহে এসে পৌছিলে সেখানে এক হৃদয় বিদায়ক দৃশ্যের অবতারণ ঘটে।

 

কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবারের লোকজন ও স্বজনরা। শোকে ভাসছে গ্রাম। সেই সঙ্গে বাঁধতে ক্ষোভের দাঁনা।

 

একুয়ানের পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা জানান., গত বছরের মার্চ মাসে শ্রীধরপাশা গ্রামের গ্রামের লিবিয়ার দালাল আলী হোসেনের মাধ্যমে চার লাখ টাকায় লিবিয়া যায় একই গ্রামের কৃষক তরিকুল ইসলামের ছেলে একুয়ান। সেখানে পৌঁছার পর দালাল চক্র তাকে আটক করে অমানবিক নির্যাতন চালায়।তাকে সেখান থেকে রক্ষা করতে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হয়। পরে আরও ৫ লাখ টাকা দিয়ে তাকে ইতালি পাঠানোর চুক্তি হয়। গত ১৬ জুন অবৈধভাবে সাগরপথে ইতালি যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় একুয়ানের। এখবর জানার পর ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন। আর দালাল আলী হোসেনের বাবা. মা গ্রাম ছেড়ে গা ঢাকা দেয়। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় তাঁর লাশ দেশে আসে। শুক্রবার বিকেলে একুয়ানের লাশ সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্তের পর গ্রামের বাড়িতে আসে।

একুয়ানের বাবা তরিকুল ইসলাম স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে জায়গা জমি সব বিক্রি করে করে তিন কিস্তিতে দালাল আলী হোসেনের বাবা শ্রীধরপাশা গ্রামে বসবাসকারী আবুল মিয়া ও মা আসমা বেগমের কাছে ১৯ লাখ টাকা দেই। আমার ছেলেকে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের কাছে স্বাক্ষ্য প্রমান রয়েছে।আমি দালাল আবুল ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করব।

 

একুয়ানের চাচা ফজলু মিয়া বলেন, দুই ভাই তিন বোনের মধ্যে একুয়ান ছিল সবার বড়। অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে দালালদের প্ররোচনায় জমি বিক্রি করে লিবিয়া যায়। সেখানে তাকে মারধর করায় তাকে মাফিয়া চক্রের কাছ থেকে বাঁচাতে ১০ লাখ টাকা এবং ইতালি পাঠানোর জন্য আরও ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু লাশ হয়ে ফিরল সে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।

 

স্থানীয় এক যুবক জানান, পরিবারের প্রধান ছেলেকে হারিয়ে পরিবারটি এখন নি:স্ব হয়ে পড়েছে। দালালদের প্ররোচনায় গেম এর নামে মরনযুদ্ধে অকালে ঝড়ে গেল একটি প্রাণ। এরকম অনেক পরিবার দালালদের খপড়ে পড়ে নি:স্ব হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে আইনানুগত ব্যবস্থা দিতে হবে।

 

জগন্নাথপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মিজানুর রহমান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।