খালেদা জিয়ার জানাজা সম্পন্ন

প্রকাশিত: ৩:২৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৫ | আপডেট: ৩:২৫:অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৫

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।

 

বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় তার নামাজে জানাজা হওয়ার কথা থাকলেও আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় পৌনে ৩টার দিকে। বেলা ৩টায় জানাজা শুরু হয়।

সেখানে প্রথমে খালেদা জিয়ার জীবনের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। জানান, ৪৩ বছরের রাজনৈতিক জীবনে ৪১ বছরই বলিষ্ঠ হাতে দলের নেতৃত্ব দেন।  জনগণের কল্যাণে করেছেন কাজ।

 

খালেদা জিয়ার জানাজা পড়ান জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক। তাঁর জানাজায় অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, প্রধান বিচারপতি, সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।

তার জানাজায় অংশ নিতে এসেছেন ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জানাজাস্থলে ছিলেন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, ইরান, কাতারসহ ৩২ দেশের রাষ্ট্রদূত। হাজির ছিলেন তিন বাহিনীর প্রধান। মানুষের ঢল নামে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এবং সংসদ ভবনের সামনের মাঠে।

 

জানাজা শেষে সংসদ ভবন এলাকাসংলগ্ন জিয়া উদ্যানে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন হবে।

 

জানাজায় অংশ নিতে মঙ্গলবার রাত থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীদের ভিড় বাড়তে থাকে। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন।  খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে তারা গণপরিবহন, ট্রেন, লঞ্চ ও ব্যক্তিগত যানবাহনে করে রাজধানীতে আসেন।

জানাজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা এবং সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মানিক মিয়া এভিনিউসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ২৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

 

বিএনপি চেয়ারপারসনের মৃত্যুতে তিন দিনের শোক ঘোষণা করে সরকার। আজ সকাল থেকে দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিতসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রয়েছে। সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বুধবার একদিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।

দলের চেয়ারপারসেন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সাতদিনের শোক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। মঙ্গলবার থেকে আগামী একসপ্তাহ দলটির সব কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। এই সময়ে কালো ব্যাজ ধারণ করবেন দলের নেতাকর্মীরা।

 

গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় ‘দেশনেত্রী’, ‘আপসহীন’ উপাধিতে ভূষিত বেগম খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

বেগম খালেদা জিয়া লিভার, কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আথ্রাইটিস ও ইনফেকশনজনিত সমস্যাসহ বিভিন্ন জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন। উল্লেখ্য চলতি বছর ৭ জানুয়ারি তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে তার স্বাস্থ্যের কিছুটা উন্নতি ঘটে। তিনি দেশে ফিরে আসেন। তবে বয়স প্রতিকূল থাকায় এবং নানাবিধ রোগের জটিলতার কারণে তিনি প্রায়ই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তেন।

সর্বশেষ গত ২৩ নভেম্বর বেগম খালেদা জিয়াকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। দেশবাসীর প্রত্যাশা ছিল, তিনি পূর্বের ন্যায় এবারও কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু চিকিৎসকদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে চিরদিনের মতো না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।