ওসমান হাদি মারা গেছেন II শুক্রবার সারা দেশে কফিন মিছিল: শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা

প্রকাশিত: ১২:৩৬ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৫ | আপডেট: ১২:৩৬:পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৫

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

 

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে মারা যান তিনি। রাতে ওসমান হাদির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ ও ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

 

রাজধানীর পুরানা পল্টন এলাকায় গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ওই রাতেই সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।

 

শরিফ ওসমান হাদি ১৯৯৩ সালে ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা একজন মাদ্রাসা শিক্ষক, যার আদর্শ ও নৈতিক শিক্ষা হাদির জীবন গঠনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি কনিষ্ঠতম।

ওসমান হাদির শিক্ষা জীবনের ভিত্তি গড়ে ওঠে ঝালকাঠির বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঝালকাঠি এন এস কামিল মাদ্রাসায়। সেখান থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করে তিনি উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান ঢাকায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। এই প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেন।

 

ছাত্রজীবন শেষ করার পর হাদি শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করেন। এরপর তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।

 

জুলাই অভ্যুত্থানের পর ইনকিলাব মঞ্চ গঠন করে আলোচনায় আসেন হাদি। ইনকিলাব মঞ্চ প্রতিষ্ঠার পর জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষণ, শহীদ ও আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণার দাবিতে শাহবাগে ধারাবাহিক সমাবেশ আয়োজন করেন হাদি।

বিভিন্ন টেলিভিশনের টক শোতেও নিয়মিত আমন্ত্রণ পেতে থাকেন। প্রথমে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হলেও পরে আহ্বায়কের দায়িত্ব নেন।

শুক্রবার সারা দেশে কফিন মিছিল:

ইনকিবাল মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃতু্যর খবরের পর তাকে হত্যার প্রতিবাদের শুক্রবার সারা দেশে কফিন মিছিল ও বিশেষ দোয়ার ঘোষণা দিয়েছে জুলাই ঐক্য।

‍“তার মৃত্যুতে আগামীকাল সারা দেশ সকল মসজিদে বাদ জুমা বিশেষ দোয়া এবং কফিন মিছিলের আহ্বান জানাচ্ছে জুলাই ঐক্য,” ঘোষণায় বলেছে জুলাই ঐক্য।

 

তারা আরো বলেছে, শহীদ ওসমান বিন হাদি আমাদের জুলাইয়ের অস্তিত্ব। তার প্রতি ফোটা রক্তের বদলা বাংলাদেশের মাটিতে নেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ।

 

শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা

ইনকিবাল মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তার মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন তিনি।

হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

 

এ সময় অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যু আগামী শনিবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করছি।”