আশ্রয় দিয়ে নিজেই নিরাশ্রয় হলেন বৃদ্ধা: পুলিশের সহযোগিতায় অবশেষে ফিরে পেলেন বাড়ী

প্রকাশিত: ৮:৫৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০২৩ | আপডেট: ৮:৫৮:অপরাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০২৩

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি: 

নিঃসন্তান আশি ঊর্ধ্ব বিধবা আরজান বিবি। ভিক্ষা করে আশ্রিত নাতিকে নিয়ে চলছিল সংসার। হঠাৎ সেই নাতি তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। বাড়ি ফিরে পেতে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে ঘুরতে কেটে গেল দীর্ঘ ৫ বছর। অবশেষে শনিবার নিজবসত বাড়িটি পুলিশের সহযোগিতায় ফিরে পেয়েছেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নের চিলাউড়া গ্রামে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ২০০৫ সালে নিঃসন্তান ওয়াহিদ উল্লা ও তাঁর স্ত্রী আবজান বিবির দেখাশুনার জন্য ভাতিজা মজমিল মিয়ার ছেলে অজুদ মিয়াকে (সম্পর্কে নাতি) তাঁদের বাড়িতে আশ্রয় দেওয়া হয়। ২০০৮ সালে স্বামী ওয়াহিদ উল্লা মারা যাওয়ায় জীবিকার জন্য ভিক্ষা করতে হয় বৃদ্ধা আবজান বিবিকে। পরে ২০১৮ সালে ওই বৃদ্ধাকে তাঁরই বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন আশ্রিত নাতি অজুদ মিয়া। ঘরের আসবাবপত্র ও বাড়ির গাছ কেটে বিক্রি করেন অজুদ। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে বৃদ্ধা আবজান বিবি স্থানীয়ভাবে কোনো সমাধান না পেয়ে আশ্রয় নেন থানা পুলিশের। বিষয়টি জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমানের নজরে আসলে তিনি গতকাল বাড়িটি উদ্ধার করে ওই বিধবা বৃদ্ধাকে ফিরিয়ে দেন।

বৃদ্ধা আবজান বিবি বলেন, কত মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছি, কিন্তু কোন সুফল মিলেনি। শুধু আশ্বাস পেয়েছি। লোকজনের মুখে শুনলাম আমাদের থানার ওসি সাহেব খুবই ভালো। তাঁর কাছে গেলে বিচার পাব। শেষে গত কয়েকদিন আগে থানায় গিয়ে আমার কষ্টের কথা ওসি সাহেব কে বলি। সব শুনে তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেন। অবশেষে গতকাল পুলিশ আমার বাড়ি উদ্ধার করে দিয়েছে।

চিলাউড়া-হলিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু অজুদ আমাদের কথা শুনেনি। পুলিশ এসে বাড়ি উদ্ধার করে ওই বিধবার জন্য চৌকি, লেপ-তোষকসহ কাপড়চোপড় সব কিছু কিনে দিয়ে গেছে। মানবিক এ কাজের জন্য থানার ওসি মিজানুর রহমানকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, নিঃসন্তান বৃদ্ধা বিধবা ঐ মহিলাকে তাঁর নিজের বাড়ি থেকে জোরপূর্বক তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওই অসহায় নারী ৫ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে থানা এসে বিষয়টি জানান। বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়িটি উদ্ধার করে আমরা তাঁকে বুঝিয়ে দিয়েছি।