মৌলভীবাজার মেয়র ফজলুর রহমানের যুক্তরাজ্য সফর এবং কিছু কথা

প্রকাশিত: ১০:২৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৭, ২০২৪ | আপডেট: ১০:৩০:অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৭, ২০২৪

সম্পাদকীয়:


 

 

গত ৬ই মার্চ বার্মিংহামের স্মলহিথে কমিউনিটির রেস্তোরাঁ নামে খ্যাত ‘পানসী’-তে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ফজলুর রহমানের বক্তব্য উপস্থিতজনের অনেকেরই মনোযোগ আকর্ষণ করে। বৃটেনে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে দেশের জনপ্রতিনিধিদের সফর ও মতবিনিয়সভা নতুন নয়, তবে বৃটিশ-বাংলাদেশীদের দেশে ‘প্রবাসী’ আখ্যায়িত না করার বা ‘প্রবাসী’ শব্দের ব্যবহারের সংকোচনের সামাজিক এ প্রথার বিষয়ে জনসমক্ষে জনপ্রতিনিধিদের কথা বলতে কম শুনা যায়। ফজলুর রহমান বলেন, একবিংশ শতাব্দির এ বৈজ্ঞানিক যুগে গোটা বিশ্ব এখন একটি গ্রামে রূপান্তরিত হয়েছে, তিনি তথ্য পরিবেশন করে বলেন, মৌলভীবাজার শহরের অধিকাংশ বাসস্থানের স্বত্বাধিকারী বৃটেনে বা অন্যান্যদেশে বসবাস করলেও তাঁদের নিয়মিত সফর রয়েছে বাংলাদেশে, তাই তাঁরা প্রবাসী নন। ফজলুর রহমান মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি দৃঢ় আনুগত্য প্রকাশ করে আওয়ামীলীগের আদর্শে বিশ্বাসী বলে পুনরাবৃত্তি করেন, তবে তিনি উপস্থিত সকলকে নিশ্চিত করেন যে, তিনি সকল দলের মতাদর্শে বিশ্বাসী নাগরিকের মেয়র। এমন দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে সকল দলের প্রতিনিধি হিসাবে পরিচয় দলীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে কম পরিলক্ষিত হয় বলেও অনেকে মন্তব্য করেন। মৌলভীবাজার জেলা জনকল্যাণ কাউন্সিলের উদ্যোগে আয়োজিত ৬ই মার্চের উক্ত সভায় বার্মিংহামের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মিডিয়া কর্মি এবং বাঙালী কমিউনিটির বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত হয়ে ফজলুর রহমানের বক্তব্যের প্রশংসা করেন এবং ‘প্রবাসী’ শব্দ ব্যবহার হ্রাসের নতুন শ্লোগানকে সাধুবাদ জানান।

 

 

মেয়র ফজলুর রহমান দেশের অন্যান্য অতিথিদের মতোই বৃটেনের বিভিন্ন নগরীর স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জন-প্রতিনিধি এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। খুবই ব্যস্ত সময় কাটান বৃটেনে। তবে, মিডিয়া কর্মিদের সূত্রমতে, ফজলুর রহমানের বক্তব্য ও কর্মতৎপরতায় মৌলভীবাজার শহর একটি নান্দনিক শহর হিসাবে প্রকাশ পায় এবং বৃটেনের স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের সাথে আলাপচারিতায় তাঁর অভিজ্ঞতা বিনিময় হয়।

 

‘প্রবাসী’-এর আভিধানিক অর্থ ‘বিদেশবাসী’ বা ‘পরবাসী’। আর বৃটেনের দি গার্ডিয়ান পত্রিকার সংজ্ঞা অনুযায়ী, কেউ বসবাসের উদ্দেশ্যে নিজ দেশ ছেড়ে অন্য কোনো দেশে এক বছরের অধিক সময় থাকলে তাঁকে অভিবাসী বলা হয়। অর্থাৎ দেশের বাহিরে বসবাসকারী বাঙালী বংশোদ্ভূতরা বৃটেনের জনগণের কাছে অভিবাসী আর বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিকদের কাছে তাঁরা প্রবাসী। তবে এ দুই সংজ্ঞার মধ্যে বৃটেনে জন্ম হওয়া বাঙ্গালী বংশোদ্ভূতরা আইনগতভাবে বৃটিশ নাগরিক হলেও তা কথোপকথনে বা আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে স্বীকৃত নয়। অতএব অভিবাসী বা প্রবাসী হিসাবেই দেশের বাহিরে বসবাসকারীদের পরিচিতি থেকে যায়। আর এমনি পরিস্থিতিতে একজন জনপ্রতিনিধির প্রবাসী শব্দের সংকোচনের ধারণাটি বাংলাদেশের বাহিরে সকল বাংলাদেশী বংশোদ্ভূতের মধ্যে কৃতজ্ঞতাবোধের সৃষ্টি করে।

 

বাংলা কাগজের পরিবার ফজলুর রহমানের বৃটেন সফরকে ইতিবাচক বলে মনে করে। তাঁর বক্তব্যে দেশের বাহিরে থাকা বাংলাদেশী বংশোদ্ভূতদের অধিকার সংরক্ষণ এবং আদায়ের ইঙ্গিত বহন করে। তাছাড়া স্থানীয় সরকার পদ্ধতির সফল দেশ হিসাবে খ্যাত বৃটেনের বিভিন্ন এলাকার কর্মকর্তাদের সাথে মেয়র রহমানের অভিজ্ঞতা বিনিময়কে বাংলা কাগজ সাধুবাদ জানায়।