কৃষক নেতা আব্দুল মালিক আর নেই

প্রকাশিত: ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৩, ২০২২ | আপডেট: ১০:৫৮:পূর্বাহ্ণ, জুন ১৩, ২০২২

বাকা ডেস্কঃ   কুলাউড়ার রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম সৎ ব্যক্তিত্ব ভাষা সৈনিক কৃষক নেতা কমরেড আব্দুল মালিক আজ ভোর ৫.১৭ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিওন…।)  মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।  তিনি দুই ছেলে ও দুই মেয়ে সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

মহান এ নেতার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন বাংলা কাগজের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, সম্পাদক খছরু মোহাম্মদ খান এবং সাপ্তাহিক ‘আমাদের বাংলা কাগজ’ -এর সম্পাদক আতাউর রহমান মুমিত।

 

আব্দুল মালিক ১৯৩৪ ইংরেজির ২৩ জুন কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী পৃথিমপাশা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মরহুম মো. ইলিম এবং মা মরহুমা ছবরুননেছা খাতুন।

কমরেড আব্দুল মালিক বায়ান্নর ভাষা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বাংলার প্রতিটি লড়াই সংগ্রামে ছাত্র, যুব ও জনতাকে নেতৃত্ব দেন। মিছিলে সংগ্রামে ছিলেন অগ্রসৈনিক। এজন্য তাকে ভাষা সৈনিকও বলা হয়।

কমরেড আব্দুল মালিক ৬২’র আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের সময় রাষ্ট্রদোহী মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় ৪ মাস কারাবরণ করেন। পরে মার্শাল কোর্টে বাবা এবং ভাইয়ের অঙ্গীকার মাধ্যমে খালাস পান। তারপরও ১৯৬৯’র গণআন্দোলনে নিজেকে সক্রিয় রাখেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরে অস্ত্র হাতে না নিলেও আগরতলা আশ্রয়কেন্দ্র এবং বাংলার মুক্তিসেনাদের মধ্যে গুপ্তচরের ভূমিকা পালন করেন। বিভিন্ন রসদ যোগান, খবরা-খবর আদান-প্রদান করেন।

কমরেড আব্দুল মালিক এ দেশের পুরোধা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমানসহ বহু গুণধর ব্যক্তি ও রাজনীতিকের সাহচর্চে ধন্য হয়েছেন। গরীব-দুঃখী-মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের বীর মাওলানা ভাসানীর ন্যাপের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি নবাব আলী সফদর খান রাজা সাহেবের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন।

কমরেড আব্দুল মালিক কমিউনিস্ট আন্দোলনের পাশাপাশি বাংলাদেশ কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি হিসাবে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে ফরিদপুর জেলার অম্বিকা ময়দানে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় ‘কৃষক সম্মেলনের’ উদ্বোধক ছিলেন।

কমরেড আব্দুল মালিক শুধু রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত রাখেননি, শিক্ষাঙ্গনেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন। কর্মধা ইউনিয়নের কর্মধা উচ্চ বিদ্যালয় এবং পাট্টাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন। তিনি রাউৎগাঁও শম্ভুনাথ প্রাথমিক বিদ্যালয়, পৃথিমপাশার ভাটগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইটাহরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন, যা পরবর্তীতে সরকারিকরণ হয়।