কুলাউড়ায় পূর্ববিরোধের জেরে তরুণ জিলান খুন, গ্রেপ্তার ৩

প্রকাশিত: ১২:১১ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২৩ | আপডেট: ১২:১১:পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২৩

মোঃ ইব্রাহীম আলী, কুলাউড়া:  মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার জয়চণ্ডী ইউনিয়নে হোসাইন মুহাম্মদ জিলান (২২) হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (৮ জুলাই) দুজন ও আজ রবিবার একজন আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় নিহত জিলানের পিতা আব্দুল হামিদ বাদী হয়ে আজ রবিবার বিকেলে ৯ জনকে অভিযুক্ত করে ও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার ১ নম্বর আসামি হলেন জয়চণ্ডী ইউনিয়নের ঘাগটিয়া গ্রামের মৃত সরবর খানের ছেলে রুমেল খান (৩৫), ২ ও ৩ নম্বর আসামি হলেন মোটরসাইকেল মেকানিক গিয়াস মিয়ার ছেলে সাজু (৩২) ও আব্দুল্লাহ (২৬)।

পুলিশ জানায়, জিলান হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মামলার ১ নম্বর আসামি রুমেল খাঁন, এজাহারভুক্ত আসামি গিয়াসনগর গ্রামের নেওয়ার আলীর ছেলে হেলাল আহমদ (৩০) ও দতরমুড়ি গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে মাহি হোসেন (২০)-কে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ ও নিহত জিলানের পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জয়চণ্ডী ইউনিয়নের ঘাগটিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে হোসাইন মুহাম্মাদ জিলান গত ৩ জুলাই সন্ধ্যায় মোটরসাইকেলযোগে তার ছোট ভাইকে বাসে তুলে দিতে শহরে যান। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শহরের দক্ষিণ বাজারের বাসস্ট্যান্ডে ওত পেতে থাকা ৭-৮ জন যুবক জিলানের গতিরোধ করে। এ সময় পূর্ববিরোধের জের ধরে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে জিলানকে বেধড়ক মারধর শুরু করে তারা।

জিলান প্রাণে বাঁচতে মোটরসাইকেল থেকে নেমে বাসস্ট্যান্ডের সম্মুখে আয়েশা টেলিকম নামক একটি দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেয়। কিন্তু তাতেও তার শেষ রক্ষা হয়নি। পরে ওই দোকানে ঢুকে যুবকরা জিলানকে টেনেহিঁচড়ে সেখান থেকে বের করে এবং তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্যে কুপিয়ে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

সেখানে ৫ দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ৭ জুলাই শুক্রবার রাতে জিলান মারা যায়। ওই হামলার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
নিহত জিলানের বাবা আব্দুল হামিদ বলেন, ‘আমার ছেলেকে পূর্ববিরোধের জেরে রুমেল খাঁন গংদের পরিকল্পনায় হত্যা করা হয়। ঘটনার দিন গিয়াস মিয়ার ছেলে সাজু ও আব্দুল্লাহ’র নেতৃত্বে ৭-৮ জন মিলে আমার ছেলের ওপর নৃশংস হামলা চালায়। ৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় আমার ছেলের মৃত্যু হয়।

ঘটনার সাথে জড়িত ও পরিকল্পনাকারীদের আমি ফাঁসি চাই।’
কুলাউড়া থানার ওসি মো. আব্দুছ ছালেক বলেন, ‘নিহতের বাবা আব্দুল হামিদ বাদী হয়ে ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আজ রবিবার বিকেলে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।