
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর শহরের বাসুদেব বাড়ি আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের সামান্য বৃষ্টি হলেই একটি ড্রেন (নালা) অভাবে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ড্রেন নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসলেও কোন কাজ হচ্ছে না। সম্প্রতি এলাকার বাসিন্দারা দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে পৌর প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে লিখিত আবেদন করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ পৌর কতৃপক্ষের উদাসীনতা ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ড্রেন নির্মাণ না করে কম গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ড্রেন নির্মাণ করায় তাদেরকে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগে ভূগতে হচ্ছে। ভুক্তভোগী নাগরিকরা জানান,১৯৯৯ সালে জগন্নাথপুর পৌরসভা গঠন করা হয়। পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড বাসুদেব বাড়ি আবাসিক এলাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ জনবসতিপূর্ণ এলাকা। এ ওয়ার্ডে রয়েছে সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। দুটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। দ্বাদশ শতাব্দীর এ উপজেলার একমাত্র স্মৃতি চিহ্ন বাসুদেব মন্দির। এছাড়াও এ এলাকায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ নাগরিকের বসবাস। বাসুদেব বাড়ির প্রবেশমুখে খালে রয়েছে পৌর সভার ময়লা আবর্জনা রাখার ডাস্টবিন। সামান্য ঝড়বৃষ্টি হলে সড়কটি ডাস্টবিনের ময়লা আবর্জনা ও খালের নোংরা পানিতে ডুবে যায়। ফলে সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা দুরূহ হয়ে পড়ে। বিশেষ করে স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের অন্ত নেই। বাসুদেব বাড়ি আবাসিক এলাকায় বাসিন্দা উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সহসভাপতি দ্বিপক কুমার দেব জানান,গত দুই যুগে পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থার তেমন কোন অগ্রগতি দেখা যায় নি।২০২০ সালে পৌর সভার পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় ৮ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন নির্মাণের উদ্যাগ নেয়া হয়। প্রাথমিক জরিপকাজ চলাকালে বাসুদেব বাড়ি আবাসিক এলাকায় ড্রেন নির্মাণের কথা থাকলেও অদৃশ্য কারণে ড্রেনের কাজ আর হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ এ এলাকার বাসিন্দারা বৈষম্যর শিকার। একই এলাকার বাসিন্দা মৃদুল চৌধুরী বলেন,পৌর সভার ভূমিকায় আমরা হতাশ। মন্দিরের প্রধান গেইটের সামনে ময়লা আবর্জনার স্তুপ ডাকনাবিহীন ড্রেন এসব দেখার কেউ নেই। জগন্নাথপুর পৌরসভা সাবেক কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন মুন্না জানান,আমার দায়িত্বের শেষ সময়ে আট কিলোমিটার ড্রেনের বরাদ্দ আসে। তখন আমি বাসুদেব বাড়ি আবাসিক এলাকার খালে ড্রেন নির্মাণের প্রস্তাব করে এসেছিলাম পরে কেন হয়নি বুঝতে পারছি না। জগন্নাথপুর পৌর সভার সদ্য বিলুপ্ত কাউন্সিলর কৃষ্ণ চন্দ বলেন,অনেক চেষ্টা করেছি। পৌর কতৃপক্ষ ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঠেলাঠেলিতে কাজ হয়নি। জগন্নাথপুর পৌর সভার প্রকৌশলী সতীশ গোস্বামী জানান,১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আট কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ হলেও স্হানীয় কিছু সমস্যার কারণে বাসুদেব বাড়ি আবাসিক এলাকার ড্রেন নির্মাণ করা যায়নি। তবে জনগুরুত্ব বিবেচনায় আমরা চেষ্টা করছি কিছু করার। জগন্নাথপুর পৌরসভার প্রশাসক ইউএনও বরকত উল্যাহ বলেন, বাসুদেব বাড়ি আবাসিক এলাকার নাগরিকরা তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরে লিখিত আবেদন করেছেন। আমি গুরুত্ব দিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।