সিলেটে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে চোখ নস্টের চেষ্টা মামলার বিচার শুরু হচ্ছে ৩১ আগষ্ট
![সিলেটে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে চোখ নস্টের চেষ্টা মামলার বিচার শুরু হচ্ছে ৩১ আগষ্ট](https://www.banglakagojnews.com/wp-content/uploads/2023/08/Photo-1-Sylhet-28.08.2023.jpg)
ষ্টাফ রিপোর্টার, সিলেট
সিলেটের বিশ্বনাথের চানপুরে হামলাকালে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে চোখে ‘মরিচের গুঁড়া’ ছিটানার সেই চাঞ্চল্যকর মামলাটির বিচার শুরু হচ্ছে আগামি ৩১ আগষ্ট। আর মামলা দায়েরের প্রায় ২বছর ৭মাসের মাথায় চার্জশিটভূক্ত নতুন আসামি করা হয়েছে বাদীর দুই চাচাতো বোন ও ভাবিসহ ৩জনকে।
সর্বশেষ চলতি বছরের গত ২৬ জুলাই শুনানী শেষে সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলি আদালত-৩ এর বিচারক মো. আব্দুল ওয়াহাব’র রায়ের প্রেক্ষিতে ওই তিনজনকে নতুন করে আসামি করা হয়। আগামি ৩১ আগষ্ট ওই আদালতেই বিচার কার্য্য শুরু করা হবে বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়।
মামলায় নতুন অভিযুক্তরা হলেন, মামলার বাদী মনোফর আলীর আপন চাচাতো বোন চানপুর গ্রামের আফিয়া বেগম (৫৩) ও কোনাউড়া নোয়াগাঁও গ্রামের সফিকুল ইসলামের স্ত্রী রেজিয়া বেগম (৪০) এবং চাচাতো ভাই মাহমদ আলীর স্ত্রী রোকেয়া বেগম (৪৩)।
জানাগেছে, ২০২০ সালের ১৬ আগষ্ট লুডু খেলাকে কেন্দ্র করে চানপুরের মনোফর আলী (৬৫) ও তার চাচাতো ভাই মাহমদ আলী (৫৫) পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এর দেড় মাস পর ৩০ সেপ্টেম্বর মাহমদ আলী পক্ষ মনোফর আলী পক্ষের উপর হামলা করেন। এতে স্ত্রী ও ৩ ছেলেসহ গুরুতর আহত হন মনোফর আলী।
এসময় চোখে ‘গুড়া-মরিচ’ ছিটিয়ে চোখ নস্ট কারার চেস্টাও করেন প্রতিপক্ষরা। ঘটনার পর ১ অক্টোবর মনোফর আলী বাদী হয়ে ১০জনকে অভিযুক্ত করে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেন, (মামলা নং ২)।
মামলা দায়েরের ৪ মাস পর ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এজাহার নামীয় আসামি দুই বোন রোকেয়া বেগম ও আফিয়া বেগম এবং অপর আসামি রেজিয়া বেগমকে বাদ দিয়ে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার তৎকালীন এসআই ফজলুল হক, (অভিযোগপত্র নং ৫৯)।
আর এজাহার নামীয় অপর সাত আসামি মাহমদ আলী (৫৫), বড়ভাই ছনুফর আলী (৬২), তার ছেলে রায়হান আলী (২৩), ভাতিজা ইমরান আলী (৩০), ভাগনা সুমন আহমদ (৩০), শিপন আহমদ (২৫) ও রোকন আলীকে (২৬) চার্জশিটে অভিযুক্ত করা হয়।
এজাহারভূক্ত ওই তিন আসামিকে বাদ দিয়ে চার্জশিট দেওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ফজলুল হকের বরুদ্ধে নানা অিভিযোগ এনে ২০২১ সালের ২৪ জুলাই মামলার বাদী মনোফর আলী সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট (আমলি আদালত-৩) আদালতে নারাজি দেন।
এর দু’মাস পর গত ১৮আগষ্ট বুধবার শুনানী শেষে সিলেটের ওই আদালতের তৎকালীন বিচারক হারুন-উর রশীদ বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য সিলেটের গোয়েন্দা (সিআইডি) পুলিশের কাছে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন।
এরপর দীর্ঘ তদন্ত শেষে সিআইডি’র উপ-পুলিশ পরিদর্শক রিপন কুমার দে চলতি ২০২৩ সালের গত ৫এপ্রিল আবারও দুই বোনসহ ওই তিন নারীকে বাদ দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন, (সম্পূরক অভিযোগপত্র নং ৫৯)।
এর ৩মাসের মাথায় চলতি ২০২৩সালের গত ৪জুন মামলার বাদী মনোফর আলী একই আদালতে আবারও নারাজি দেন। নারাজির প্রেক্ষিতে বেশ কয়েকবার শুনানীও হয়। সর্বশেষ শুনানীকালে গত ২৬ জুলাই ওই আদালতের বিচারক মো. আব্দুল ওয়াহাব ঘটনার ছবি ও ভিডিওচিত্র দেখে চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া ওই ৩নারীকে নতুন করে অভিযুক্ত করার নির্দেশ দেন।
সেই সঙ্গে মামলা নিস্পত্তির লক্ষে আগামি ৩১ আগষ্ট বৃহস্পতিবার বিচার কার্য্য শুরু করার নির্দেশও দেন।
বাদী পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট একেএম সামিউল আলম এ প্রতিবেদককে বলেন, চাঞ্চল্যকর এই মামলার তিনজন আসামিকে বাদ দিয়ে প্রথমে থানার পুলিশ কর্মকর্তা চার্জশিট দেন।
এরপর মাহমদ আলী নামের আসামি মারা যাওয়ায় তাকে এবং ওই তিন নারীকে আবারও বাদ দিয়ে সিআইডির এক কর্মকর্তা চার্জশিট দেন।
শেষপর্যন্ত বাদীর নারাজির প্রেক্ষিতে ঘটনার ভিডিওচিত্র দেখে মামলা দায়েরের দীর্ঘ প্রায় ২বছর ৭মাস পর চার্জশিট থেকে বাদ
দেওয়া দুই বোনসহ তিন নারীকে নতুন করে ওই মামলার চার্জশিটে অন্তভুক্ত করা হয়েছে। আগামি ৩১ আগষ্ট ওই মামলার বিচার কার্য্য শুরু হচ্ছে ।