৩৭ বছর এক স্কুলে শিক্ষকতা করে সংবর্ধনায় সিক্ত হয়ে অবসরে গেলেন ছায়াদ আলী স্যার

প্রকাশিত: ১২:১৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০২৩ | আপডেট: ১২:১৯:অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০২৩

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার স্বরূপ চন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছায়াদ আলী কে গত
বৃহস্পতিবার অবসর জনিত বিদায় সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। জগন্নাথপুরের ইউএনও সাজেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক গুরুপদ রায়ের পরিচালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, প্রবীণ রাজনীতিবীদ সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি সিদ্দিক আহমেদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একে এম মকলেছুর রহমান,উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিম,সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমান, জগন্নাথপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইকবাল মাসুদ,পাটলী উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক নজির উদ্দিন, প্রধান শিক্ষক শামীম মিয়া, জগন্নাথপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শংকর রায়,সংবর্ধিত অতিথি ছায়াদ আলী পৌর সভার প্যানেল মেয়র সাফরোজ ইসলাম, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সভাপতি আজাদ আলী, সদস্য সাংবাদিক আব্দুল হাই,আরিফুল ইসলাম, রাহুল বৈদ্য,অন্তর দাশ শুভ সাইদুল ইসলাম মুরছালিন প্রমুখ

বিদ্যালয় সূত্র জানায়,১৯২৬ সালে জগন্নাথপুর গ্রামের ভারত রায় তাঁর বাবার নামে স্বরূপ চন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৬ সালে বিদ্যায়টি জাতীয়করন হয়। ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ছায়াদ আলী। ২০১৬ সালের ২৭ জুন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি ।দায়িত্ব গ্রহণ করে মাত্র চারজন শিক্ষক নিয়ে শিক্ষক সংকটে পড়েন। তাঁর প্রচেষ্টায় অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক করে শিক্ষক স্বল্পতা দূরীকরণে অভিভাবকদের অর্থায়নে আরও চারজন বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। সেই থেকে সরকারি চারজন ও বেসরকারি আরও চারজন শিক্ষক নিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালান।দীর্ঘদিনের ভালো ফলাফলের খড়া কাটিয়ে এসএসসি ও জেএসসিতে জিপিএ-৫ এর দেখা পাওয়া যায়। ধারাবাহিকভাবে গত এসএসসির ফলাফলে ৫ জিপিএ-৫ সহ শতভাগ ফলাফল আসে।
সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে আবেগে আপ্লুত হয়ে কেঁদে কেঁদে ছায়াদ আলী বলেন,জেলার অন্যতম সরকারি এ বিদ্যালয়ে যোগদান করে অনেক ভালো ভালো শিক্ষকের
স্পংশে শিক্ষকতা করার সুযোগ পাই। ভালোবাসার এ বিদ্যালয়ের জীবনের অধিকাংশ সময় কাটালাম। এ বিদ্যালয়ের কথা আমি ও আমার পরিবার আমৃত্যু মনে রাখব।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একে এম মখলেছুর রহমান বলেন , আমি দীর্ঘ সাত বছর ধরে এ উপজেলায় কর্মরত।আমার জানামতে তিনি একজন সৎ ও দক্ষ শিক্ষক।
জগন্নাথপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র সাফরোজ ইসলাম বলেন, একজন আর্দশ শিক্ষক হিসেবে তিনি জগন্নাথপুরবাসীর কাছে স্বীকৃত। আমরা তাঁর ছাত্র হিসেবে গর্ববোধ করি।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সিদ্দিক আহমেদ বলেন, যোগদান থেকে অবসরকালীন সময দীর্ঘ ৩৭ বছরে তাঁর কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তিনি শিক্ষক হিসেবে ভালো ছিলেন।
প্রসঙ্গত শিক্ষক ছায়াদ আলী সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। চাকুরী সূত্রে জগন্নাথপুর এসে স্হায়ী বসবাস শুরু করেন। ডাকবাংলো সড়কে শাহজালাল ওয়ার্কশপ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করে সুনামের সহিত ব্যবসা করেন। পরবরীতে সিলেট শহরে স্হায়ী হন।তাঁর ছেলে মেয়েরা সব পড়ালেখায় ভালো। এক মেয়ে কানাডায় উচ্চ শিক্ষার জন্য রয়েছে। তিনিও স্বস্ত্রীক কানাডার ভিসা পেয়েছেন। শিক্ষার্থীদের কাছে তিনি টেকনিক্যাল স্যার হিসেবে পরিচিত। সংবর্ধনা শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সন্মাননা স্মারকসহ বিভিন্ন উপহার তুলে দেওয়া হয়।