সিলেট শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশিত: ৯:৩০ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২২ | আপডেট: ১১:৪১:পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২২

 

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় শাবিপ্রবিতে উপাচার্যের বাসভবনে যান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন উপাচার্য। বৈঠকে উপাচার্যকে দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী।

এদিকে, প্রায় এক মাস পর বাসভবন থেকে বের হয়েছেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। বাসার ফটকের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান ছিল না। ছিল না ব্যারিকেড। ক্যাম্পাসে বড় কোনো বিক্ষোভও ছিল না। তবু, ঘর থেকে বের হচ্ছিলেন না তিনি।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেন শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রী। রাত সাড়ে ৮টায় তারা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইশফাকুল হোসেন জানিয়েছেন, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠান সফল করতে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী।

উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তার পদত্যাগের দাবিতে প্রায় এক মাস ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।

 

আরও পড়ুন: দ্রুত স্বরূপে ফিরিয়ে দিন শাবিপ্রবি- এম.এ আজিজ

 

শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শত ছাত্রী। শনিবার সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হলের ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায়। পরদিন ১৬ জানুয়ারি বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে উপাচার্যকে মুক্ত করে নিজ বাসভবনে নিয়ে যায়। এর পর থেকে আর বাসা থেকে বের হননি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন।

ওই দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও হল ত্যাগের ঘোষণা দিলেও শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যান। দাবি আদায়ে আমরণ অনশনে বসে শিক্ষার্থীদের একটা অংশ। ১৬৩ ঘণ্টার দীর্ঘ অনশন ভাঙান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

ক্যাম্পাসে না এলেও বাসায় থেকেই উপাচার্য দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন তারা। পদত্যাগ করার আগে তিনি ক্যাম্পাসে এলে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যেতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক ভবনে ১৭ জানুয়ারি তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ওই দিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তবে, শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙার পর দিন ২৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় প্রশাসনিক কার্যক্রম। চলে ভর্তি কার্যক্রম।