তেল ছাড়া রান্না কতোটা স্বাস্থ্যসম্মত?

প্রকাশিত: ১২:২৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৩, ২০২২ | আপডেট: ১২:২৯:অপরাহ্ণ, মার্চ ১৩, ২০২২

বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। মধ্যবিত্তের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। তেল ছাড়া কি রান্না হয়? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মাথায়। অনেকেই বাধ্য হয়ে এ বিষয়ে টিপস পেতে ইউটিউবে সার্চ করছেন। শুনলে অবাক হবেন, তেল ছাড়াও রান্না করা যায়। উপমহাদেশের বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. বিমল ছাজেড় তেল ছাড়া রান্না করার পদ্ধতি জানিয়েছেন এবং লিখেছেন বিনা তেলে রান্নার পদ্ধতি নিয়ে বই।

এ সম্পর্কিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন তিনি। সেখানে তেল ছাড়া রান্না করার পদ্ধতি দেখিয়েছেন।

সবজি রান্না করার জন্য সচরাচর প্রথমে তেল ব্যবহার করা হলেও তিনি শুরুতে দিয়েছেন জিরা। জিরা ভেজে নিয়েছেন। এরপর দিয়েছেন পেঁয়াজ বাটা। পেঁয়াজ ভেজে শুকিয়ে নিয়েছেন। মশলা আগুনের তাপে শুকিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হলে তখন তিনি পানি ব্যবহার করেছেন। এরপর দিয়েছেন রসুন ও আদা বাটা। অন্যান্য মশলা ও লবণের ব্যবহারও করেছেন তিনি। তারপর সেখানে বিভিন্ন সবজি দিয়েছেন। মনে রাখতে হবে, যখনই মনে হচ্ছে তাপে রান্না পাত্রের সঙ্গে লেগে যাচ্ছে তখনই পানি দিতে হবে পরিমাণ মতো। তার মতে, হার্টের রোগীদের জন্য এই খাবার খুব উপযোগী। এভাবে মশলা বানিয়ে যে কোনো সবজি বা বিরিয়ানিসহ অন্যান্য খাবার রান্না করা যাবে।

ভিডিও বার্তায় দেওয়া ডা. বিমলের মতে, তেলবিহীন খাবার খেলে ব্লাডপ্রেশার কমে যায়, ওজন কমে যায়, হার্ট ভালো থাকবে এবং সুগার কন্ট্রোল হয়। ২০ বছরের পরে তেল যুক্ত খাবার ছেড়ে দেওয়া উত্তম। সেক্ষেত্রে অনেকের প্রশ্ন- তেল কি একেবারেই দরকার নেই? এর উত্তরে তিনি বলেছেন, সব খাবারের মধ্যেই তেল রয়েছে। ভাতে ১ গ্রাম তেল, গমে এক গ্রাম, ডালে ৫ গ্রাম তেল আছে। প্রতিটি সবজি ও খাবারে তেল রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ক্লিনিকাল নিউট্রিশন বিভাগের চীফ কনসালটেন্ট, পুষ্টিবিদ ডা. সামিরা খালেক সুকৃতির সঙ্গে কথা হয় রাইজিংবিডির। তেল ছাড়া রান্নার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তেল ছাড়াও খাবার রান্না করা যায়। তবে অল্প তেল বা কম পরিমাণে তেল দিয়ে রান্না করা ভালো। একেবারে তেল ছাড়া রান্না করা ঠিক নয়।’

 

ব্যাখ্যা দিয়ে এই পুষ্টিবিদ বলেন, ‘আমাদের দুই ধরনের ভিটামিন আছে। ফ্যাট সলিউবল ভিটামিন হলো এ, ডি, কে। এগুলো অ্যাবজরবেশনের জন্য অবশ্যই তেল লাগবে। তেল না দিলে তেলের ক্যালরি এভয়েড করা হবে, ভিটামিনগুলো শরীর পাবে না এবং শরীরে চর্বি হবে না। আপনি বয়েল করে খেতে পারেন কিন্তু সেটাও পুরোপুরি স্বাস্থ্যকর নয়। যেসব তেলের পুষ্টিগুণ ভালো সেসব তেল পরিমাণে কম দিয়ে রান্না করা উচিত।’

‘একেবারে তেল না দেওয়ার চেয়ে সামান্য পরিমাণে তেল দেওয়া উত্তম’ বলেন ডা. সামিরা খালেক।