ফুল হাতে মিষ্টিমুখে আদালত খেকে বাড়ি ফিরলেন ৪৫ দম্পতি

প্রকাশিত: ৬:৩৩ অপরাহ্ণ, জুন ৮, ২০২২ | আপডেট: ৬:৩৩:অপরাহ্ণ, জুন ৮, ২০২২

 

মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী, সুনামগঞ্জ :

সুনামগঞ্জে আদালতের রায়ে হাতে ফুল নিয়ে আর মিষ্টিমুখ করে বাড়ি ফিরেছেন ৪৫ দম্পতি। বুধবার (৮ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টায় সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ যুগান্তকারি রায় ঘোষণা করেন। ফলে দীর্ঘদিন আদালতে হাজিরা দেয়ার অবসান ঘটল।

এসময় আদালত বলেন, পারিবারিক নানা বিরোধে যৌতুকের জন্য নির্যাতনের আভিযোগে বিভিন্ন সময়ে করা ৪৫টি মামলার রায় দিয়েছেন। এ রায়ের ফলে এ ৪৫টি দম্পতি এখন সকল ভেদাভেদ ভুলে নিজ নিজ সংসারে মনোনিবেশ করবেন। এমন প্রত্যাশা করেন আদালত।

রায় ঘোষনাকালে আদালতের উপস্থিত ছিলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর নান্টু রায়, সিনিয়র আইনজীবী মল্লিক মঈন উদ্দিন সুহেল, রফিকুল আলমসহ সিনিয়র ও জুনিয়র আইনজীবীগণ, সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীসহ গণমাধ্যম কর্মীগণ।

জেলার ধর্মপাশা উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের মফিজ আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম জানান, ২০১৫ সালে একই গ্রামের মো. আলী হোসেনের মেয়ে সালমা আক্তারের সঙ্গে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয় তাদের। দেড় বছর আগে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এ ঝগড়াকে কেন্দ্র করে মামলা হয় আদালতে।

এর পর থেকে মাসেপর মাস আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিতে হচ্ছে তাদের। মামলাটি আপোস মিমাংসা হওয়ায় তিনি এখন তার স্ত্রী সালমা আক্তারকে নিয়ে সুখের সংসার করতে পারবেন। একই বক্তব্য স্ত্রী সালমা আক্তারের। তিনি জানান, তাদরে সাড়ে ৩ বছরের একমাত্র ছেলে শাফায়েতুল ইসলাম এখন থেকে বাবা ও মাকে কাছে পাবে। মামলাটি আপপোসে নিষ্পত্তি হওয়ায় বিবেদ ভুলে তারা এখন সুখে সংসার করতে পারবেন। তারা এখন তাদের ভুল বুঝতে পারছেন।

জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামের মো. মফিজ আলী ছেলে আতিকুর রহমান জানান, ২ বছর আগে একই উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের বেতগড়া গ্রামের আব্দুল আজিজের মেয়ে জান্নাতুল ফেদৌসের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের প্রায় ১৬ মাসের একটি সন্তান রয়েছে। এ সন্তান জন্ম নেওয়ার পরপর পারিবাকি কলহের জেরে স্ত্রী আদালতে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় তাদের নিয়মিত হাজিরা দিতে হত। এখন মামলাটি আপোসে নিষ্পত্তি হওয়ায় তারা এখন মামলার বেড়াজাল থেকে বেড়িয়ে সংসার জীবনে মনোনিবেশ করবেন। ছোট খাটো বিষয় নিয়ে আদালতে যাবেন না। নিজেদের ভুল নিজেরা সংশোধন করে সংসার চালাবেন। স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের মতামতকে সমান গুরুত্ত দিয়ে চলবেন।

এর আগে চলিত বছরের ১৪ মার্চ এমন যুগান্তকারি রায় দিয়ে এইক আদালতের একই বিচারক ৫০ দম্পতিকে সংসার জীবনে ফিরিয়ে দেন। গত ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর এমন যুগান্তকারি রায় দিয়ে এইক আদালতের একই বিচারক ৪৭ দম্পতিকে সংসার জীবনে ফিরিয়ে দেন। একইভাবে ২০২১ সালে ১৯ জানুয়ারি ৩৫ দম্পতি এবং একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি ৬৫ দম্পতি।