জমিয়ত নেতা মুশতাক হত্যার ঘটনায় এক এমপি প্রার্থীর সন্দেহের তীর হাম্মাদ গাজী নগরীর দিকে

প্রকাশিত: ১১:২৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৫ | আপডেট: ১১:২৮:অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৫

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি –
জমিয়ত কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুনামগঞ্জ জেলা জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের সহ সভাপতি ও অধ্যক্ষ মাওলানা মুশতাক গাজীনগরীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় জেলাজুড়ে তোলপাড় চলছে।

আজ সোমবার বিকেলে জগন্নাথপুর পৌর শহরের একটি রেষ্টুরেন্টে জমিয়ত উলামায়ে ইসলামে বাংলাদেশের (মুফতি ওয়াক্কাস) ১২ দলীয় জোটের সংসদ সদস্য প্রার্থী জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সৈয়দ তালহা আলম সংবাদ সন্মেলন করে সুনামগঞ্জ-৩ আসনে জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম (ওবায়দুল্লাহ ফারুক) খেজুর গাছ প্রতীকের প্রার্থী হাম্মাদ গাজীনগরী কে এঘটনায় ব্যক্তিগতভাবে সন্দেহ করছেন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন,আমার জানামতে জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম খেজুর গাছ প্রতীকের প্রার্থী হাম্মাম গাজীনগরীর সাথে মুশতাক গাজীনগরীর দ্বন্দ্ব ছিল। কিছু দিন আগে শান্তিগঞ্জের সুহেল তালুকদার নামে একজন ফেসবুকে টাকা মেরে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে খেজুর গাছের প্রার্থী করা নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটার্স দেন। এ ঘটনা মুশতাক ভাইয়ের মাধ্যমে হাম্মাম গাজীনগরী ধরা পড়েন।
তিনি বলেন, এ মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে নোংরা রাজনীতি শুরু হয়েছে। মাদ্রাসার কোমলমতি ছাত্রদের নিয়ে সড়ক ব্লকেড করে মব তৈরি করা হচ্ছে। জনদুর্ভোগ তৈরি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সঠিকভাবে কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না। এঘটনায় সোমবার ভোরে জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের শান্তিগঞ্জ উপজেলার সাধারণ সম্পাদক এম আব্দুল হাফিজকে সিলেট থেকে দিরাই থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তিনি সৈয়দ তালহা আলমের অনুসারী। অপরদিকে মুশতাক গাজীনগরী জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের সুনামগঞ্জ-৩ আসনের প্রার্থী হাম্মাদ গাজীনগরীর চাচাতো ভাই। তাঁর মৃত্যুর পর জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের মনোনীত প্রার্থী হাম্মাদ গাজী নগরী রাজপথে আন্দোলনে নামেন এবং হত্যার রহস্য উদঘাটন করে আসামি গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানান। সংবাদ সন্মেলনে তিনি মুশতাক গাজীনগরীর হত্যার সাথে সন্দেহজনকভাবে শান্তিগঞ্জ উপজেলার সাধারণ সম্পাদক এম আব্দুল হাফিজের নাম আসায় তিনি পুলিশের কাছে ধরা দেন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে। আমি এলাকায় আছি। আমেরিকায় যাবো না। তদন্তের প্রয়োজনে পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করলেও আমি আইনি মোকাবিলা করব। পালিয়ে যাবো না। ফ্যাসিস আমলেও পালিয়ে যাইনি। রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু, খালেদা জিয়া ও আমার নেতা মুফতি ওয়াক্কাস জেল খেটেছেন। জেলের ভয়ে রাজনীতি করিনা। জনগনের কল্যাণে কাজ করব।তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আমাদের আস্হা আছে। এ ঘটনার তদন্ত ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে। তিনি ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশের দাবি জানান। তিনি বলেন এটা হত্যা না অপমৃত্যু তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিশ্চিত করতে হবে।

প্রসঙ্গত বুধবার বিকেলে মাওলানা মুশতাক আহমদ গাজীনগরীর স্ত্রী রুবি বেগম শান্তিগঞ্জ থানায় নিখোঁজের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এতে উল্লেখ করেন মঙ্গলবার রাত ১০টা ৫১ মিনিটে ফোনে সর্বশেষ তার স্বামীর সঙ্গে কথা হয়। তখন তিনি বলেছিলেন, এক ঘণ্টার মধ্যে বাড়ীতে আসছি, এটাই ছিল শেষ কথা। এরপর সারারাত ফোন দিলেও তার ফোনে কল যায় নি। শুক্রবার সকালে দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের পুরাতন সুরমা নদী থেকে মাওলানা মুশতাকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আব্দুল হাফিজের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪—৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা হয়েছে।