মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ সেই শিশুটি সিআরপিতে ভর্তি

প্রকাশিত: ১২:০৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২২ | আপডেট: ১২:৩০:অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২২

মাগুরায় মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ হওয়া আলোচিত শিশু সুরাইয়া এখন ৭ বছরে।  তাকে অসুস্থ অবস্থায় ঢাকার সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অব দ্য প্যারালাইজড (সিআরপি) হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।

সেখানে ১৫দিন ভর্তি রেখে তাকে ফিজিওথেরাপিসহ অন্যান্য চিকিৎসা দেওয়া হবে।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে সুরাইয়ার বাবা বাচ্চু ভুইয়া মেয়েকে সিআরপি হাসপাতালে ভর্তির খবরটি নিশ্চিত করেছেন।

সুরাইয়া নতুন বছরে স্কুলে যাওয়া শুরু করলেও অসুস্থতা ও গুলির আঘাতে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে পড়ালেখা বন্ধের উপক্রম হয় বলে পরিবার জানায়।

মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ হওয়ার কারণে জন্মের পর থেকেই সুরাইয়ার কোমর থেকে দুই পায়ের নিচের অংশ অনেকটাই চলৎশক্তিহীন। সে হাঁটতে পারে না। ডান চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। চিকিৎসকরা বলছেন সুরাইয়ার ভাল চিকিৎসা না করালে বাম চোখটিও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বাবা বাচ্চু ভুইয়ার ছোট একটি চায়ের দোকান ছিলো, এখন সেটাও বন্ধ। সংসারে অভাব অনটন নিত্য দিনের সঙ্গী।

মা নাজমা বেগম বলেন, পরিবারের ছয় সদস্যের সংসার চালাতে নাভিশ্বাস উঠছে তার স্বামীর। তারপর সুরাইয়াকে নিয়ে পড়েছেন অকুল পাথারে। মাগুরা পুলিশ লাইন্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তিও  হয়েছে। শিশু সুরাইয়াকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছেন লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মত করে গড়ে তুলবেন।

নাজমা বেগম জানান, তার সমবয়সীরা বাচ্চারা এখন দৌঁড়ে বেড়ালেও সুরাইয়া এখন দাঁড়াতেও পারেনা। কেউ দুহাতে ধরে দাঁড় করিয়ে দিলেও ছেড়ে দিলেই সে পড়ে যায়। সুরাইয়ার ডান পাশটিতে জোর কমে যাচ্ছে। ডান হাতে সে কাজ করতে পারেনা। তবে চিকিৎসকেরা বলেছেন তাকে উন্নত চিকিৎসা দিতে পারলে ভালো হয়ে যাবে কিন্তু আমাদের সেই অর্থনৈতিক ক্ষমতা নেই যে তাকে উন্নত চিকিৎসা দেব।

বাবা বাচ্চু ভূইয়া জানান, ২০১৫ সালে ২৩ জুলাই মাগুরা পৌরসভার দোয়ার পাড় এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ হয় সুরাইয়া। সফল অস্ত্রপচারে পৃথিবীর আলো দেখে সে। আল্লাহর অশেষ কৃপায় মা ও মেয়ে দুইজনই বেঁচে যায়।

মাগুরা সরকারি পুলিশ লাইন্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জয়া ম্যাডাম বলেন, সুরাইয়া গত ২ জানুয়ারি আমাদের বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তারপর থেকে সুরাইয়াকে নিয়ে কিছু একটা করার চিন্তা করছি। সেই ভাবনা থেকে মাগুরার সন্তান কাজী বিল্লাল ঢাকায় সমাজকল্যাণে চাকরি করেন। তার সহযোগীতায় ঢাকায় সিআরপিতে ভর্তি করাতে পেরেছি।