বিএনপির সংবাদ সম্মেলন: ‘রাষ্ট্র নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ নেই’

প্রকাশিত: ৭:২৯ অপরাহ্ণ, মে ২২, ২০২৫ | আপডেট: ৭:২৯:অপরাহ্ণ, মে ২২, ২০২৫

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, রাষ্ট্র নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ নেই। ড. খলিলুর রহমানকে অবিলম্বে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ থেকে সরিয়ে দেশে-বিদেশে তার অবস্থান সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য জনগণের সামনে হাজির করতে হবে। আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি।”

 

বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, “ইতোমধ্যেই কথিত মানবিক করিডোর ইস্যু নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বিশেষ করে ড. খলিলের ভূমিকা নিয়ে দেশের স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের মনে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।মানবিক করিডোর নিয়ে গত এক মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের একেকজনের একেকরকম বক্তব্য মনে হয়, এই সরকার পথ হারিয়ে ফেলেছে।”

 

তিনি বলেন, “আমাদের কথা পরিষ্কার, এসব করার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের নয়। এসব বিষয় বিবেচনার দায়িত্ব জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক নির্বাচিত সরকারের।এই সরকারের নিরপেক্ষতা এবং সরকার পরিচালনার সক্ষমতা নিয়ে জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে এই সরকারের যাদের সম্পর্কে জনমনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে, তাদের সম্পর্কে জনসম্মুখে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করুন। তারেক রহমানকে নিয়ে ড. খলিলের বক্তব্য গণতন্ত্রের স্থায়ী নিরাপত্তা ও ঐতিহাসিক স্বার্থকতার প্রতি বিদ্বেষপরায়ণ।”

 

রিজভী বলেন, “রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান দেড় দশকের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে দেশের মানুষ বিস্মিত-হতবাক, উদ্বিগ্ন এবং ক্ষুব্ধ হয়েছেন।”

 

তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদের প্রতিভূ হাসিনা যেভাবে গণতন্ত্রকে কফিন পরিয়ে তথাকথিত উন্নয়নের ইন্দ্রজাল সৃষ্টির জন্য জিয়া পরিবারকে নিয়ে কুৎসা রটাতেন, উপদেষ্টার এই মন্তব্য যেন তারই পুনরাবৃত্তি। এখনো যেন লোকমানসে উজ্জ্বলতর তারেক রহমানের ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করার জন্য প্রতিশোধের চোরাবালিতে আঘাত হানার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

ড. খলিলুর রহমান যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত জীবন প্রসঙ্গটি যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিমূলক বলে দাবি করেন রিজভী। তিনি আরো বলেন, “ধান ভানতে শিবের গীত’ গাওয়ার মতো ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, ‘কেবলমাত্র আমি আমেরিকায় থেকেছি বলে আমাকে যদি বলা হয় আপনি বিদেশি নাগরিক, তাহলে কালকে তারেক রহমানকে সে কথা বলতে হবে। আমাকে ঢিল নিক্ষেপ করলে সেই ঢিল কিন্তু অন্যের ওপর গিয়েও পড়তে পারে।”

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ড. খলিলুর রহমানের এমন বক্তব্য নিঃসন্দেহে আত্মগরিমার প্রদর্শন এবং দুরভিসন্ধিমূলক বলে উল্লেখ করেন রিজভী। তার দাবি, খলিলুর রহমান তারেক রহমানের রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা বিনষ্ট, জনসাধারণকে বিভ্রান্ত এবং মানুষের মাঝে তার মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার হীন উদ্দেশ্য নিয়েই এই বক্তব্য রেখেছেন। যা দুর্ভাগ্যজনক বিভ্রান্তির কবলে পড়েছে। তাকে মনে রাখতে হবে বাংলাদেশ অনির্বাচিত কর্তৃত্ববাদের অনুকূল সমাজভূমি নয়। তিনি তার কথাবার্তায় এবং আচরণে বিগত কিছুদিনে ‘ধরাকে সরা জ্ঞান’ করতে শুরু করেছেন। তিনি হয়তো দেশি-বিদেশি কারো স্বার্থ চরিতার্থ করার মিশনে যুক্ত বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। শেখ হাসিনার হাতের মুঠোয় ছিল ধ্বংসের শক্তি, জনগণ তা প্রতিহত করেছে। আমরা আর নতুন করে কোনো প্রভূত্ববাদের অধীনতার নাগপাশে বন্দি হতে চাই না।”