বাংলা কাগজ ডেস্কঃ
মাদারীপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ২টা ৫ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।মৃত্যুকালে সৈয়দ আবুল হোসেন স্ত্রী খাজা নার্গিস ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন।
মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার একান্ত সচিব (পিএস) সমির। তিনি জানান, এক মেয়ে দেশের বাইরে আছেন, তিনি দেশে আসার পর মরদেহ দাফন করা হবে। সাবেক যোগাযোগমন্ত্রীর মৃত্যুর পর তার নির্বাচনী এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সৈয়দ আবুল হোসেন ১৯৫১ সালে মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার ডাসার ইউনিয়নের বেতগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পেশায় একজন রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী। সৈয়দ আবুল হোসেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে মাদারীপুর-৩ আসন থেকে ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এরপর তিনি সপ্তম, অষ্টম ও নবম সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের এলজিইডি প্রতিমন্ত্রী ছিলেন এবং ২০০৯ থেকে ২০১২ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তার এলাকায় অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন।
২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের চুক্তি সই করে সরকার। কিন্তু বছরের শেষ দিকেই তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পরে ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি যোগাযোগমন্ত্রীর পদ থেকে সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করেন। সেতু বিভাগের তৎকালীন সচিব মোশাররফ হোসেন ভুুঁইয়াকে দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হয়। এ সময় তাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবিও ওঠে।
যদিও ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি সেতুর ঠিকাদার নিয়োগে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদন দেয় দুদক। কিন্তু ৩০ জুন পদ্মা সেতুর ঋণ চুক্তি বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। তবে ৯ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরবর্তী সময়ে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগে কানাডার আদালতে একটি মামলা হয়। দীর্ঘ ৫ বছরের দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১৭ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি কানাডার আদালত জানায়, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের যে অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক ঋণপদ থেকে সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করেন।