সুনামগঞ্জে পৃথক ধর্ষন মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত: ৬:৩৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৯, ২০২২ | আপডেট: ৬:৩৪:অপরাহ্ণ, মার্চ ২৯, ২০২২

 

মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী, সুনামগঞ্জ ব্যুরো প্রধান :

সুনামগঞ্জে পৃথক ধর্ষন মামলায় ৫ জনকে যাবজ্জীবন ও প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানার টাকা ভিকটিমরা ক্ষতিপুরণ হিসেবে পাবেন বলেও আদেশ দেন বিচারক।

মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দুপুরে এ রায় ঘোষনা করে সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যিনালের বিচারক মো৷ জাকির হোসেন।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জেলার সদর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রিপন মিয়া, ধর্মপাশা উপজেলার ফাতেমা নগর গ্রামের মো. ওয়াহেদ আলীর ছেলে রুকন মিয়া, জগন্নাথপুর উপজেলার ইসহাকপুর গ্রামের আলকাছ উল্লার ছেলে শাহীন মিয়া, সদর উপজেলার জিতেন্দ্র দাসের ছেলে শৈলেন দাস, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মিয়ারচর গ্রামের ইমন মিয়ার ছেলে আসাদ মিয়া।

আদালত সূত্রে জানাযায়, ২০১১ সালের ১১ আগস্ট আসামি রিপন পাশ্ববর্তী তেরাপুর গ্রামে ফুফার বাড়িতে যায়। এসময় তার ফুফা ও ফুফু বাড়িতে না থাকায় ফুফুতো বোনকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে ভিকটিম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। একই ধর্মপাশা উপজেলার ফাতেমা নগর গ্রামের ওয়াহেদ আলীরে ছেলে রুকন মিয়া একই গ্রামের নবম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল ২০১১ সালের ২ এপ্রিল স্কুলে যাওয়ার পথে ভয় দেখিয়ে তার সহযোগি পাশ্ববর্তী কামলাবাজ গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে জজ মিয়ার সহযোগিতায় অপহরণ করে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। পরে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই মামলা আদালত রুকন মিয়াকে যাবজ্জীন কারাদন্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন এবং তার সহযোগি জজ মিয়াকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজর টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে আরো ২ মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন। জজ মিয়া পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতারে পুলিশকে নির্দেশ দেন আদালত।
জগন্নাথপুর উপজেলার ইসহাকপুর গ্রামের আলকাছ উল্লার ছেলে শাহীন মিয়া ২০০৯ সালের ৪ অক্টোবর সকাল ১০ টার দিকে গ্রামের এক পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়ার পথে অপহরণ করে সিলেটের ভোলাগঞ্জে নিয়ে গিয়ে ধর্ষন করে। পরে স্কুল ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেন।ওই মামলা আদালত রুকন মিয়াকে যাবজ্জীন কারাদন্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন।
সদর উপজেলার ইছাগরি গ্রামের জিতেন্দ্র দাসের ছেলে শৈলেন দাস একই গ্রামের নবম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়াতো। ২০১৩ সালের ১৫ মার্চ ওই ছাত্রী বাবা ও মা বাড়িতে না থাকায় শৈলেন ছাত্রীটিকে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। পরে ওই ছাত্রী বাদী হয়ে ধর্ষন মামলা দায়ের করে। ওই মামলা আদালত রুকন মিয়াকে যাবজ্জীন কারাদন্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন। জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মিয়ারচর গ্রামের ইদন মিয়ার ছেলে আসাদ মিয়া পাশ্ববর্তী আমবাড়িয়া গ্রামের দশম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়া আসার সময় প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। ২০১৫ সালের ১৯ মার্চ স্কুলে যাওয়ার পথে স্কুল ছাত্রীটিকে অপহরণ করে জোরপূর্বক এফিডেভিট করে বিয়ে করে নিজ বাড়িতে নিয়ে ওই ছাত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষন করে। পরে ছাত্রীর বাবা বদী হয়ে আসাদ ও তার বাবা ইদন মিয়া এবং মা জগতবানুকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা আদালত রুকন মিয়াকে যাবজ্জীন কারাদন্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন এবং ইদন মিয়া ও তার স্ত্রী জগতবানুকে খালাস দেন আদালত।