অমরাবতির গল্প–(৩৬)—মোঃ শেবুল চৌধুরী।

প্রকাশিত: ৪:২০ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৮, ২০২৩ | আপডেট: ৪:২০:পূর্বাহ্ণ, জুন ২৮, ২০২৩

 

অমরাবতির গল্প মানেই প্রকৃতি প্রেমের গল্প, পরিবারের গল্প। কবিতার গল্প। কবিতা আমরা লিখি, কবিতা আমরা পড়ি, কবিতা আমরা ভালোবাসি । কবিতার মাধ্যমে আমরা জীবনকে বুঝতে পাই।কারণ সাধারণ এলোমেলো শব্দ/ জীবনের সাধারণ শব্দ/স্বাভাবিক শব্দ/আটপৌরে শব্দ এগুলো তো আছেই। কবিতার কথা আলাদা ।এগুলো কবিরাই বুঝেন। আর কথা নয়, আসুন জেনে নিই অমরাবতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও উপদেষ্টা কবি ফয়জুর রহমান চৌধূরীর ‘কালযাপের বৃক্ষ’ কবিতার মাধ্যমে কি রয়েছে অমরাবতির গল্প।

 

গ্রাম বাংলার আমার জন্ম ;বাবা মরহুম লুৎফুর রহমান চৌধূরী ছিলেন স্কুল শিক্ষক।দাদা মরহুম হাবিবুর রহমান চৌধূরী ছিলেন একজন খ্যাতনামে দলিল লেখক।
আজ থেকে শত বৎসর আগের প্রতিভা নিয়ে
আমার পূর্ব পুরুষের বসত বাড়ি শত জাতের জানা অজানা নামের অসংখ্য বৃক্ষে ছিলো শোভিত । সে ছিলো পঞ্চাশ দশকের আগের কথা । বাবা বৃক্ষ রোপণ পছন্দ করতেন । সাথে হাত দিয়ে বৃক্ষ সোজা করে রাখতাম ।তিনি মাটি চাপে দিতেন , শুকনো মৌসুমে পানি। গ্রামে
তখন অনেক হিন্দু বসতি ছিলো -যে সব বাড়িতে ফুলের গাছ প্রচুর থাকতো পুজা পার্বনে ফুলের প্রয়োজনে । ফুলের প্রতি আমার সব দিনের ভালোবাসা। গ্রামের বাড়িতে তখনকার সময়ে গেন্ডাফুল, জুই, চামেলি, গন্ধরাজ, জবা,
পাতা বাহার ইত্যাদি আরো অনেক রকম ফুল
থাকতো ।
সময় দ্রুত চলে যায় ,জন বসতি এক পরিবার
থেকে বর্ধিত দশ পরিবার ,কল কারখানার যোগ রাস্তাঘাট, যানবাহন সব মিলে শহর মুখীতা মানুষকে বৃক্ষ পরিবেশ থেকে সরিয়ে রেখেছে ।

 

আজ পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তাএকান্ত ভাবে দেখা দিয়েছে ।আমার পরিবারে আমরা পাঁচ ভাই ।আমার বড় ভাই প্রয়াত ছয়ফুর রহমান চৌধুরী ছিলেন
একজন বৃক্ষ প্রেমিক । তিনি কর্মজীবনের প্রথম অধ্যায় সিলেটের বিভিন্ন চা বাগানের চাকরী করতেন । সত্তর দশকে আমরা দুই ভাই ফলের বাগান করেছিলাম । আমার ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়েছুর রহমান চৌধুরী ও একজন বৃক্ষ প্রেমিক পরিবেশবাদী ।ছোট ভাই আমেরিকা প্রবাসি উবেদুর রহমান চৌধূরী এবং সর্বকনিষ্ঠ ভাই মিজানুর রহমান চৌধূরী একজন
একনিষ্ট প্রাণ বৃক্ষ প্রেমিক । এসব কিছুই একজন মহান স্কুল শিক্ষক পিতার অবদান
ছিলো আমাদের জন্য ।

এত কিছু পারিবারিক বৃক্ষ প্রেমের কাহিনী
বলার একটি মাত্র উদ্দেশ্য এখানে ,প্রতিটি
পরিবার বৃক্ষ প্রেমিক হওয়া আজ প্রয়োজন
পরিবেশ না বাঁচলে প্রাণী জগত বাঁচবে না
মানুষ বাঁচবে না । পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাবে
কোথা ও অতিবৃষ্টি কোথাও অনাবৃষ্টিতে
ফসল নষ্ট হয়ে যাবে । ভূমির উর্বরতা কমে যাবে
মহামারী ,দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে । বিভিন্ন ভাইরাস
অনেক অজানা রোগের সৃষ্টি হবে ।
আসুন আমরা সকলেই পৃথিবীর প্রতি দয়াবান
হই । বৃক্ষ রোপণ এবাদত সুবহান আল্লাহ বলে
একটি বৃক্ষ লাগান । বেহেস্তে আপনার জন্য
একটি গাছের জন্মনিবে । দয়া করে বৃক্ষ নিদন
থেকে বিরত থাকুন । গাছ লাগান পরিবেশ
বাঁচান হউক প্রতিটি পরিবারের স্লোগান।
আমরা যারা প্রবাসে বসবাস করছি,আমরা
দেশ বিদেশে বিভিন্ন ভাবে এ ধরনের কর্মসূচীতে
অংশ নিতে পারি ।

আমার ভাগিনা সেবুল চৌধুরী(কলাম লিখক)
যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে বসবাস কারী প্রায়
পাঁচ/ছয় বৎসর যাবত “অমরা-বতি”নামক একটি সংগঠনের মাধ্যমে দেশে বিদেশে বৃক্ষ রোপন
অভিযান চালিয়ে যাইতেছে ।

 

সে আজ ক্যান্সার আক্রান্ত ,সকলের নিকট
দোয়া চেয়ে আমাকে তার স্বপ্নের অমরাবতির
কথা আমাকে বলতেছিল । আমি তাহাকে
বললাম আমরা সকলেই একদিন চলে যাবো
আমরা পৃথিবীতে অমরাবতি রেখে যেতে চাই।
সুতরাং সুবহান আল্লাহ বলে একটি বৃক্ষ রোপন
ইন্দ্রপুরীতে আল্লাহ তোমাকে বৃক্ষের সুশীতল
ছায়া দিবেন ।আসুন আমরা আমাদের ছেলে
মেয়েদের পরিবেশ বাঁচানোর তাগিদ দেই ।
আসুন —–! পৃথিবী বাঁচাই -গাছ লাগাই ।